দিব্যলোকের কিরণে সিক্ত স্নিগ্ধ সুশ্যামল,
শীর্ষে যাহার জ্ঞানের মুকুট, অঙ্গে স্নেহবলয়
সেই আমাদের স্বপ্নতীর্থ, মোদের বিদ্যালয়।
শীর্ষে যাহার জ্ঞানের মুকুট, অঙ্গে স্নেহবলয়
সেই আমাদের স্বপ্নতীর্থ, মোদের বিদ্যালয়।
মহাবিশ্বের সুধা যেথায় বিমূর্ত রূপ ধরে
লক্ষ জগৎ আলোয় মিলায় এক হতে একাকারে
দীর্ঘ নিশার আঁধার ঘুচায় রবির অভ্যুদয়,
সেই আমাদের স্বপ্নতীর্থ, মোদের বিদ্যালয়।
চির আলোকিত বিদ্যালোকের অনন্ত কিরণে
প্রাণ হতে প্রাণ সিঞ্চিছ তব স্বর্গীয় অঙ্গনে,
হরষে-বিষাদে কঠিনে-কোমলে কত শত নব প্রাণ
ভাঙিয়া আবার গড়িয়া করিলে চির সুন্দর অম্লান —
স্বপ্ন তরঙ্গে হানিলে আঘাত নিদ্রিত অন্তরে
বহ্নিশিখায় দূরিয়া দুর্বলতার অন্ধকারে,
অন্বেষি যত অন্তরলিপি স্নিগ্ধ মধুর দিশে
সুপ্ত অঙ্কুরে বিকশিলে তুমি ফুলে ফলে স্নেহাশিসে।
জীবনের পথে করিলে ন্যায় ও সত্যে বলীয়ান,
শত আঁধারের মাঝে উজ্জ্বল সুদৃঢ় অটল প্রাণ,
শিখাইলে জ্ঞানের আলোকে দূরিতে হিংসা, দ্বেষ, ও গ্লানি,
কলুষ নাশিতে, হাসি ফুটাইতে, বিলাইতে প্রেমের বাণী।
পথহারা কত অভাগীরে তব কোলে দিলে আশ্রয়,
কঠোর আঘাতে চূর্ণিলে কত জীর্ণ মলিনতায়,
আশাতীত কত স্বপনের পথে করিলে আলোকচারী
দানিলে জীবন, মৃত্যু-করাল গ্রাস হতে উদ্ধারি —
নিজ ছায়াতলে শুকাইলে কত বেদনা-অশ্রুজল,
আশা-অমৃতে ভরিয়া তুলিলে শূন্য হৃৎকমল,
নিঃস্ব অক্ষি নির্ভয়ে চায় সুদূর আলোর পানে
শত বরষের সঞ্চিত ব্যথা বিকাশে শক্তিবাণে।
মারণ অণুর সন্ত্রাসকালে উন্নত করি শির
প্রসারিলে বাহু আলোকদীপ্ত বিদ্যা-মহাদ্রির,
রক্ষিলে তব সন্তানদিগে মহৌষধে! তব রণ
হেরি লজ্জিত অতিমারি আজ করিয়াছে পলায়ন।
সে শকতি আজ উঠুক জ্বলিয়া, এই বিষাদের ক্ষণে!
চিরতরে দাও স্থান তব ওই অমৃত চরণে
স্তব্ধ করিয়া নিঠুর নিদয় অমোঘ সময়স্রোতে!
বিদায়বেলার ছায়া যেন কভু না পড়ে এ স্বপ্নপ্রাতে —
জানি, তবু মেঘ আসিয়া ঝরাবে বিরহ-বেদন-ধারা;
তারপর তব প্রাঙ্গণ আলো করিবে লক্ষ তারা,
শুধু সে আলোর অতলে হারাবে একটি আকুল প্রাণ
নির্জলা ভালোবাসা ছাড়া কিছু পারেনি যে দিতে দান।
তবু জেনো, তব অটল আসন যুগ-যুগান্ত ধরে
সেই স্থানে, যারে পাষাণ সময় গ্রাসিতে কভু না পারে —
হৃদয় গহীনে চির উজ্জ্বল অনন্ত আলোয় তুমি
বিদ্যামৃত-নিকেতন! মম স্বর্গ, স্বপ্নভূমি!
© All rights reserved.
Comments
Post a Comment
Please let us know what do you think about it.